উত্তরপ্রদেশে নারীদের জন্য বিশেষ নির্বাচনী ইশতেহার প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর !

নিউজ ডেস্ক :: সংবাদ প্রবাহ :: নয়াদিল্লি :: উত্তর প্রদেশ বিধানসভা ভোটে নারীদের মন জয়ে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি আলাদা নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কথা জানালেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সোমবার সেই কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ভোটে জিতে সরকার গড়তে পারলে নারীদের পরিবার চালাতে বছরে তিনটি করে গ্যাস সিলিন্ডার বিনা মূল্যে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে প্রত্যেক নারী যাতে বিনা টিকিটে সরকারি বাসে চলাফেরা করতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করা হবে।

এসব অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে সোমবার প্রিয়াঙ্কা হিন্দিতে টুইট করে বলেন, ‘আমার বোনদের প্রতিদিন কী প্রবল সংঘাতের মধ্য দিয়ে কাটাতে হয় আমি জানি। জানি বলেই রাজ্যের নারীদের জন্য এবার আমরা আলাদা নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

টানা ৩২ বছর উত্তর প্রদেশে কংগ্রেস ক্ষমতার বাইরে। এই তিন দশকে শতবর্ষী এই দল প্রাসঙ্গিক থাকতে চেষ্টার অন্ত রাখেনি। কখনো একাকী, কখনো সমাজবাদী পার্টি, কখনো বহুজন সমাজ পার্টি, কখনো–বা রাষ্ট্রীয় লোকদলের সঙ্গে জোট বেঁধে ভোটে লড়েছে। কিন্তু সাফল্য আসেনি। ভোটব্যাংক সব লুট হয়ে গেছে। প্রাপ্ত ভোটের হার দাঁড়িয়েছে ৬ শতাংশে। মুসলমানরা বেছে নিয়েছেন সমাজবাদী পার্টিকে। দলিতরা মায়াবতীকে। ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়রা বিজেপিকে।

দেড় বছর আগে রাজ্যের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর হাতে। প্রিয়াঙ্কা বেছে নিয়েছেন রাজ্যের নারীদের। তাঁদের জন্য একে একে বেশ কিছু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর এবার তিনি পৃথক নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কথা শোনালেন। শুধু তা–ই নয়, টুইটের সঙ্গে তিনি জুড়েও দিলেন সরকার গড়তে পারলে নারীদের জন্য কী কী করা হবে, সেই তালিকা।

প্রিয়াঙ্কা বলেছেন, আগামী ভোটে মোট মনোনয়নপত্রের ৪০ শতাংশ দেওয়া হবে নারীদের। এটা ছিল তাঁর প্রথম প্রতিশ্রুতি। তার পরেই জানিয়েছিলেন, স্কুল পাস নারীদের স্মার্টফোন ও কলেজ পাস নারীদের ইলেকট্রিক স্কুটি দেওয়া হবে। তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতায়ন ছাড়াও দুটি জিনিসই রাজ্যে নারীর নিরাপত্তার জন্য জরুরি। এই সঙ্গে তিনি জানান, বছরে তিন সিলিন্ডার রান্নার গ্যাস দেওয়া হবে বিনা মূল্যে। বিনা খরচায় সব নারী সারা রাজ্যে সরকারি বাসে ভ্রমণ করতে পারবেন।

নতুন সরকারি পদে ৪০ শতাংশ নারীকে নিয়োগ দেওয়া হবে। বয়োজ্যেষ্ঠ নারী ও বিধবাদের মাসে এক হাজার টাকা  করে পেনশনের ব্যবস্থা করা হবে। ‘আশা’ ও ‘অঙ্গনবাড়ি’ নারী কর্মীদের বেতন বাড়িয়ে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা  করা হবে। স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য রাজ্যে মোট ৭৫টি কেন্দ্র খোলা হবে। সেগুলোর নামকরণ হবে রাজ্যের বীরাঙ্গনা নারীদের নামে। কংগ্রেস মনে করছে, জাতপাতের লড়াইয়ে না গিয়ে নারীদের মন জয় করতে পারলে সেটাই হবে সঠিক ভবিষ্যৎ রণনীতি। নারীদের সমর্থন বিহারে নীতীশ কুমারকে আর পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতায় বসিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − 8 =