কোলাঘাটের জয় নিতাই গৌর সেবাশ্রমে ১০১টি পদ, ১০০ কেজি চালের অন্নভোগ

নিউজ ডেস্ক :: সংবাদ :: উত্তর 24 পরগনা : : ১০০ কেজির জালের অন্নভোগ ও ১০১টি পদের ভোগ নিবেদন কোলাঘাটের জয় নিতাই গৌর সেবাশ্রমে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে নিবেদন করে অন্নকূট মহোৎসব উদযাপিত হল। পৌরাণিক কাহিনীতে জানা যায়, বৃন্দাবনবাসীরা বৃষ্টির আশায় বৃষ্টির দেবতা ইন্দ্রের পূজো করতেন। শৈশবে শ্রীকৃষ্ণ প্রশ্ন করেন বিশ্ব চরাচরে বহু স্থানেইতো ইন্দ্রের পূজা হয় না, কিন্তু সেখানেওতো বৃষ্টি হয়। তাহলে আমরা অহেতুক ইন্দ্রের পূজা করব কেন ? কৃষ্ণের কথা শুনে যুক্তিযুক্ত মনে করে বৃন্দাবনবাসীরা ইন্দ্রের পূজো বন্ধ করলেন।

ইন্দ্র রুষ্ট হয়ে প্রবল বর্ষণ শুরু করলেন। শ্রীকৃষ্ণ দুর্যোগ থেকে তাদের বাঁচাতে গোর্বধন পর্বতকে সমগ্র বৃন্দাবনবাসীদের মাথার আচ্ছাদন করে তুলে ধরেন। ইন্দ্র ক্ষান্ত হন। এরপর কৃষ্ণ বললেন আমরা যে গো পালন করি, তার গাভী বর্ধনের জন‍্য আমরা গিরিগোর্বধনের কাছে ঋণী। চলো তার পূজো করি। সেই উদ্দেশ্যে সবার পূজা একত্রিত করলে তা প্রায় অন্ন ভোগের পাহাড়ের রূপ নেয়। সেই থেকেই উদ্ভব এই অন্নকূট মহোৎসব লোকাচার বা শাস্ত্রীয় প্রথার।

আবহমানকাল ধরে মূলত বৈষ্ণবদের মধ‍্যে, পরে শাক‍্যদের মধ‍্যেও এই লোকাচার বা প্রথা চলে আসছে। আরো নানা জায়গার মত কোলাঘাট আশ্রমে আগেরদিন মধ‍্যরাত থেকে শুরু হয় সব্জি কাটাকাটি থেকে ভোগ রন্ধনের প্রস্তুতি। আলু, উচ্ছে, পটল, ঝিঙে, বিট, গাজর থেকে নানা শাকসব্জি ভাজি। ধোকা, ডাল, ডালনা, শুক্ত, বিচেকলার ঘন্ট, শুক্তবড়া, মাসবড়া, রসা, সরষে বেগুন, কোপ্তা থেকে ফুলকপি, বাধাকপি, মূলা ইত্যাদি বিবিধ সব্জির পদ রান্নায় আগের দিন মধ‍্যরাত থেকে নিয়োজিত ছিলেন প্রায় ২৫ জন রাঁধুনি সেবায়েত।

এরসাথে ছিল পিঠে-পুলি, তালের ফুলরি, রাবড়ি, মাখন, দহি, পায়েস এবং হরেক রকম মিষ্টান্ন।
এই উপলক্ষে ভোরে মঙ্গলারতির পর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নগর সংকীর্তন পরিক্রমা করে। তারপর বিশেষ নাম যজ্ঞ পূজা ও শ্রীমত ভাগবত পাঠের পর অন্নকূট মহোৎসবের ভোগ নিবেদন করা হয়।

আশ্রমের পক্ষে কল‍্যান সামন্ত বলেন,- ” এখন কার্ত্তিক নিয়ম সেবাব্রত মাস চলছে। আশ্রমের বহু ভক্ত কঠোর কৃচ্ছ সাধন ও বহু নিত‍্যবিধি আচর পালনের মাধ্যমে এই সময় দামোদর ব্রত উদযাপন করছেন। এর মধ‍্যেই কার্ত্তিক মাসে অমাবস্যার পরদিন এই অন্নকূট মহোৎসব উদযাপিত হয়। অন্য বছর মহা ধূমধাম করে হলেও এবার পুরোমাত্রায় কোভিডবিধি মেনেই সবকিছু সীমিত আকারে করা হচ্ছে। এর মধ্যেই আমরা দেশ ও দশের মঙ্গল প্রার্থনা করি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + five =