খুদেদের বইমুখো করতে অভিনব প্রয়াস সুন্দরবনের প্রান্তিক গ্রামে

সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: নামখানা :: করোনা অতিমারিতে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল স্কুল। সম্প্রতি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। তবে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য স্কুলের দরজা এখনও খোলেনি। এই পরিস্থিতিতে তাদের পড়াশোনার কথা ভেবে একটি ফ্রি কোচিং সেন্টার চালু হল নামখানার দক্ষিণ চন্দনপিঁড়ি এলাকায়।স্থানীয় একটি ফ্লাড শেল্টারে সপ্তাহে পাঁচদিন বিনামূল্যে চলছে পঠনপাঠন। ইতিমধ্যেই প্রায় দু’শো পড়ুয়া নিয়মিত আসছে।

সুন্দরবনের অন্যতম পিছিয়ে পড়া ব্লক নামখানা। মূলত মত্‍স্যজীবী ও কৃষিজীবী পরিবারের বাস। এখন যারা স্কুলে পড়ছে, তাদের অনেকেই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। টিউশন নেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই।

এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায়, পড়াশোনা ছেড়ে অন্যান্য কাজের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। অনেকেই পড়া ভুলে যেতে বসেছে। তাদের আবার বইমুখো করতেই এই কোচিং সেন্টারটি চালু করেছে স্থানীয় একটি সংগঠন।

দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কাজ করছে এই সামাজিক সংগঠন। লকডাউনে বহু দুঃস্থ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করেছে তারা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এলাকার বহু অভিভাবকের অনুরোধে তারাই এ বার কাঁধে তুলে নিয়েছে শিশুদের শিক্ষার ভার। স্থানীয় এক অভিভাবক জানান দারুণ একটা পদক্ষেপ করেছেন এঁরা। আমি জানতে পেরে ছেলেকে ভর্তি করেছি। দীর্ঘদিন ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা থেকে দূরে। স্কুল কী, সেটাই ভুলতে বসেছে। এখানে এলে পড়াশোনাটা হবে।’

সংগঠনের প্রাক্তন সম্পাদক অতনু বেরা বলেন, ‘প্রত্যন্ত এই এলাকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কথা ভেবেই এই পরিকল্পনা। এলাকার বেশ কয়েকজন শিক্ষিত বেকার যুবক, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এই প্রচেষ্টায় সামিল হয়েছেন। গ্রামের ২৭ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক তাঁদের মূল্যবান সময় দিচ্ছেন এখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − two =