ডায়মন্ডহারবারে ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার এক

সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: বারুইপুর :: ভোট পরবর্তী হিংসায় বিজেপি কর্মী রাজু সামন্তকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় দেবাশিস হালদার নামে এক তৃণমূল কর্মীকে আটক করেছিল সিবিআই। ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে মঙ্গলবার দেবাশিসকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এদিন ধৃতকে ডায়মন্ডহারবার মহকুমা আদালতে তোলা হয়। সিবিআই এর তরফ থেকে অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন জানায়। সিবিআইয়ের আবেদনে বিচারক তিনদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

বিজেপি কর্মী খুনের মামলায় মোট ছজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। সিবিআই চার্জশিটে দেবাশিষ হালদার এর নাম রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ধৃতের বিরুদ্ধে খুন সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

পুলিশ ও সিবিআই সূত্রে খবর, দেবাশিস হালদার নামের ওই যুবক এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী নামে পরিচিত। রাজু সামন্তকে খুনের ঘটনায় আগেই তার উপর সন্দেহ করেছিলেন তদন্তকারীরা। অবশেষে, সোমবার বিকেলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। ডায়মন্ড হারবারের ২ নম্বর ব্লকের খোর্দনালা গ্রাম থেকে তাকে আটক করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

উল্লেখিত, ২৯ মে ডায়মন্ডহারবারে রামনগর থানার সাধুরহাটে রাজু সামন্ত দোকান বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদ করলে তাকে পিটিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। ঘটনার পর এলাকাবাসী অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখায়। যদিও, পুলিশ গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেয়।

পুলিশের দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হওয়ার কথা উল্লেখ ছিল। তাই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এরপর রাজু সামন্ত মৃত্যু মামলার তদন্তে নামে সিবিআই। ২৯ আগস্ট সিবিআইয়ের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিহত বিজেপি কর্মীর গ্রামে এসে মৃতের পরিজনদের সঙ্গে প্রায় ৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কথা বলে ।

ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় খুন ও ধর্ষণের ঘটনাগুলির তদন্তের দায়ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মতো রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের তলব করা শুরু করেছে সিবিআই। ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছে। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছে এই দলে জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার ।

প্রত্যেক জোনের টিমে ২১ জন করে তদন্তকারী অফিসার বা আইও। ইতিমধ্যেই রাজ্যে পৌঁছেছে ৪ যুগ্ম অধিকর্তারা। পৌঁছেছেন বেশিরভাগ ডিআইজি ও এসপি। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট আগেই জমা দিয়েছিল রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। একমাস পুরনো হয়ে গিয়েছে সেই রিপোর্ট। তাই বর্তমানে সেই তদন্ত ঠিক কোন পর্যায়ে রয়েছে, কত দূর এগোল, তা জানতেই নতুন রিপোর্ট চেয়েছে হাইকোর্ট। সিবিআই তদন্তে জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ৪০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।

ইতিমধ্যেই এই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার আবেদনে জানিয়েছিল, রাজ্যের অনুমতি না নিয়েই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। এই মর্মে রাজ্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সিবিআইকে তদন্তের অনুমতি দেওয়ার বা সিবিআই তদন্ত বন্ধ করে দেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই রাজ্যের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × four =