দীর্ঘদিন পর আবার মাথা তুলে সেজে উঠতে চলেছে সুন্দরবনের অন্যতম রানী মৌসুনি ।

সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: বারুইপুর :: সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। বুলবুল, আমপান, ইয়াসের মতো দুর্যোগ বার বার তছনছ করেছে সুন্দরবনের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মৌসুনিকেও। বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি, চাষের জমি নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি এই দ্বীপে গড়ে ওঠা পর্যটন ব্যবসায়ীদের কটেজগুলিরও ক্ষতি হয়। এখনও প্রতি পূর্ণিমা ও অমাবস্যার কটালে প্লাবিত হয় উপকূলের এলাকাগুলি। ফলে ধাক্কা খেয়েছে পর্যটন ব্যবসা।

এই কটেজগুলি থেকে উপার্জন করেন এলাকার মানুষ। ছোট দোকান থেকে শুরু করে অটো চালকদের আয়ের উৎস পর্যটন। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও করোনার জেরে ব্যবসায় মন্দা চলেছে। টানা পনেরো মাস বন্ধ ছিল মৌসুনি দ্বীপের পর্যটন। তবে শীত পড়তে শুরু করায় এ বার সুদিন ফিরবে বলে মনে করছেন অনেকে।ইদানীং রঙের পোঁচ পড়ছে কটেজগুলিতে। সংস্কারের কাজ চলছে। পর্যটকেরাও আসছেন টুকটাক। আশার আলো দেখছেন কটেজ পরিচালকেরা।

নভেম্বরের শেষে শীতের ছোঁয়া লেগেছে। সকলের আশা, ভ্রমণপিপাসু বাঙালি ফের ভিড় জমাবেন নির্জন এই দ্বীপে। চিনাই, মুড়িগঙ্গা, বটতলা নদী ও চারিদিকে সমুদ্রে ঘেরা ছোট দ্বীপ মৌসুনি। দ্বীপের সল্টঘেরিতে ২০১৭ সালে হাতেগোনা কয়েকটি কটেজ দিয়ে শুরু হয়েছিল পর্যটন ব্যবসা।

প্রথম দিকে তেমন পর্যটকের দেখা তেমন না মিললেও ধীরে ধীরে জায়গাটি পরিচিতি পায়। সল্টঘেরির ঝাউয়ের জঙ্গলে কটেজগুলো গড়ে ওঠে। নির্জন এই পরিবেশে পাখির কলতান শুনে, সমুদ্রের ঢেউ দেখতে দেখতে ছুটি কাটাতে পছন্দ করেন অনেকেই। কিন্তু সুন্দরবনের উপরে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে আছড়ে পড়ায় কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল গোটা দ্বীপ।

মৌসুনি কটেজ মালিক তপন মন্ডল জানান,‘‘অতিমারির কথা মাথায় রেখে সমস্ত নিয়ম মেনেই চালু হয়েছে পর্যটন ব্যবসা। এই দ্বীপের অধিকাংশ মানুষের জীবিকা এই ব্যবসাকে ঘিরেই। এই মুহূর্তে অনেকেই কাজে যোগ দিয়েছেন।’’ পর্যটকেরা নামখানার ১০ মাইল মোড়ে নেমে ছোট গাড়িতে করে পৌঁছে যাবেন পাতিবুনিয়া ঘাটে।

সেখান থেকে চিনাই নদী পার হয়ে আবার ঘাটে উঠে সেখান থেকে টোটোয় বসার আগে থার্মাল গান গিয়ে প্রত্যেকের দেহের তাপমাত্রা মাপা হবে। তারপরে কটেজে ঢোকার অনুমতি মিলবে। সকলকে স্যানিটাইজ় করারও ব্যবস্থা থাকছে। কটেজের মধ্যেও শারীরিক দূরত্ববিধি মানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 4 =