প্রিয় মন্ত্রীর প্রয়াণে আজ দিশেহারা গঙ্গাসাগর মেলার কর্মকর্তারা

সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: সাগর  :: : ঙ্গাসাগর মেলায় আমূল পরিবর্তন ঘটেছে তারই হাত ধরে। গত ১০ বছর ধরে গঙ্গাসাগর মেলা পরিচালনা করার দায়িত্বে ছিলেন সদ্য প্রয়াত পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। প্রতিবছর গঙ্গাসাগর মেলা পরিচালনা করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে সামলে আসছিলেন তিনি। প্রত্যেক বছরের ১১ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত অন্যতম তীর্থক্ষেত্র গঙ্গাসাগর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেক বছরই জানুয়ারির ১০ তারিখে চলে আসতেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তারপর নিজে হাতেই মেলা পরিচালনা করতেন ।১৬ রাতে অথবা বিকেলে আবার ফিরে আসতেন কলকাতায়।

মেলার চারটে দিন তিনি থাকতেন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর এর আবাসন”ঊর্মিমুখরে”। মেলার চারটে দিন জনসাধারণ ও নেতাকর্মীদের জন্য খোলা থাকতো তার দুয়ার। মেলা প্রাঙ্গণের লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ের মধ্যে বসেই বহু মানুষের সমস্যার সমাধান করতেন তিনি। গঙ্গাসাগরের সৌন্দর্যায়ন ও উন্নয়ন নিয়ে এলাকার বিধায়ক বঙ্কিম হাজরার সঙ্গে বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা ও রূপরেখা তৈরি করতেন। কলকাতায় ফিরে সেই রূপরেখা বাস্তবায়িত করতে পরিকল্পনার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে জানাতে ভুলতেননা । গঙ্গাসাগরের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প ধাপে ধাপে শেষ করতেন মুখ্যমন্ত্রী ।

মেলার কদিন সন্ধ্যা নাগাদ অন্যান্য মন্ত্রী ও বিধায়কদের নিয়ে সমুদ্রতটে মেলা অফিসে পৌঁছে যেতেন । মেলা অফিসে বসেই সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরের কাজটাও করতেন তিনি নিপুণ ভাবে। আবাসন থেকে মেলা অফিসে যাবার পথে মেলা প্রাঙ্গণে একটি চায়ের দোকানে বসে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়াটা প্রায়ই রেয়াজ করে নিয়েছিলেন । কপিল মুনির মন্দির এর আশেপাশে ভিড় জমানো সাধুসন্তদের আখড়ায় প্রত্যেক বছর নিয়ম করে পৌঁছে যেতেন। মকর সংক্রান্তির পূন্য লগ্নে পুণ্যার্থীদের ভিড়ের মধ্যেও সমুদ্রে নেমে পুণ্য স্নান করতেন প্রত্যেক বছর।

“ঊর্মিমুখর”আবাসনের পাশে একটি অস্থায়ী চায়ের দোকান বিজুরাম দাসের । রোজ প্রাতঃভ্রমণ সেরে বিজুরামের দোকানে চা খেতে আসতেন। প্রয়াত নেতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাগরের বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা ভারাক্রান্ত মনে বলেন,’১৯৭২ সালে সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর হাত ধরে কলেজ রাজনীতিতে যোগ দিই। দীর্ঘদিন ওনার সঙ্গে একান্তে কাটিয়েছি।

সাগরদ্বীপের উন্নয়ন ও গঙ্গাসাগরের সৌন্দর্যায়নের অগ্রগতি নিয়ে সুব্রত বাবুর ওর সঙ্গে প্রচুর স্মৃতিবিজড়িত ঘটনার সাক্ষী আমি। রাতের অন্ধকারে ঘুরে দেখতাম পুণ্যার্থীদের জন্য তৈরী শেড গুলি। কপিলমুনি মন্দির এর পাশে সাধুসন্তদের জন্য আজ যে কংক্রিটের শেড তৈরি করা হয়েছে তা সবই সুব্রত বাবুর জন্য বাস্তবায়িত হয়েছে। ওনার হাত ধরেই গঙ্গাসাগর মেলার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। সুব্রত বাবুর লক্ষ্য ছিল গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করানোর। তাই আজ তার চলে যাওয়াতে বড় সম্যসা হবে আগামী দিনের সাগর মেলা পরিচালনার ক্ষেত্রে । ‎

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 1 =