বর্ধমানের শক্তিগড়ে পরিত্যক্ত ইটভাটা থেকে এক মহিলার গলার নলি কাটা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার

উদয় ঘোষ :: সংবাদ প্রবাহ :: শক্তিগড় :: পরিত্যক্ত ইটভাটা থেকে এক মহিলার গলার নলি কাটা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকাল থেকে শক্তিগড় থানার কল্যাণপুর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম মৌমিতা দে ওরফে পম্পা(৩৮)। বাড়ি শক্তিগড় থানারই বাবুরপুকুর পাড় এলাকায়। মহিলার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটার দাগ রয়েছে। পুলিসের অনুমান, আততায়ীরা একজনের বেশি ছিল।

অতিরিক্ত পুলিস সুপার(বর্ধমান সদর) কল্যাণ সিংহরায় বলেন, অনেকগুলি সূত্র উঠে এসেছে। সে সব ধরেই তদন্ত শুরু হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করি, খুনের কিনারা তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। মৃতার পরিজনদের দাবি, রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ রান্নার কাজে যাচ্ছি বলে মৌমিতা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।

রাত ৯টার সময়েও তাঁকে ফিরতে না দেখে খোঁজ-খবর শুরু হয়। বারবার ফোন করলেও তা বেজে যাচ্ছিল। মৌমিতার বাবা রমেশচন্দ্র ভৌমিক বলেন, রাত ১২টার পর থেকে ফোন বন্ধ হয়ে যায়।

কারা, কী জন্যে আমার মেয়েকে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে খুন করল, কিছুই বুঝতে পারছি না। রমেশবাবুই শক্তিগড় থানায় মেয়ের খুনের দুষ্কৃতীদের ধরার দাবিতে অভিযোগ জানিয়েছেন।

এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কল্যাণপুরের সাঁকোর কাছে বর্ধমান-কালনা রোড থেকে কয়েক ফুট দূরে মাটির রাস্তার উপর চাপ রক্ত পড়ে রয়েছে। তারপাশে এক চিলতে ফাঁকা জায়গায় জলের বোতল থেকে নানারকম মুখরোচক খাবারের প্যাকেট পড়ে রয়েছে।

স্থানীয় মানুষজন সেখানে ভিড় জমিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পরেশনাথ সিংহ নামে একজন বলেন, এই রাস্তা দিয়ে ভোর থেকে অনেকে খড় নিয়ে হাটে যান। তাঁদের মধ্যে একজন রক্তাক্ত অবস্থায় মৃতাকে পড়ে থাকতে দেখেন।

এনিয়ে হইচই শুরু হলে মৃতার বাবা সকাল ৮টা নাগাদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনিই মৃতদেহটি শনাক্ত করেন। তারপরে পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পুলিস জানিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে হুগলির পাণ্ডুয়ার শান্তিকলোনীতে মৌমিতার বিয়ে হয়। তাঁর দু’টি ছেলে রয়েছে।

বছর পাঁচেক আগে ট্রেনের ধাক্কায় তাঁর স্বামী বিশ্বজিৎ মারা যান। তারপরেই বড় ছেলে সুরজিৎকে নিয়ে মৌমিতা বাপেরবাড়ি চলে আসেন। ছোট ছেলে অবশ্য পাণ্ডুয়াতেই রয়েছেন।

সুরজিৎ বলেন, রবিবার বিকেলে মা কাজে যাওয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেসময় একটি ফোন আসে। বেশ কয়েকবার রিং হওয়ার পর মা ফোন ধরে জানায়, প্রস্তুত হচ্ছি। এখনই বের হব। বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় বলে যান কাজে যাচ্ছি। রাত ৯টার সময় কাজের জায়গায় গিয়ে জানতে পারি, মা কাজে যাবে না বলে তাঁদের আগেই জানিয়ে দিয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, কারা কী কারণে মৌমিতাকে খুন করল তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × five =