সুন্দরবনের “মহারাজ”কে খাঁচাবন্দি করতে পাতা হচ্ছে দুটি খাঁচা

সুদেষ্ণা মন্ডল ::সংবাদ প্রবাহ :: গোসাবা :: সুন্দরবনের “মহারাজ”কে খাঁচাবন্দি করতে পাতা হচ্ছে দুটি খাঁচা। গোসবার চরঘেরিতে শনিবার জাল দিয়ে ঘেরার সময় হঠাৎই বাঘ থাবা মারলে জখম হয় পার্থ কয়াল নামে এক বনকর্মী। জখম অবস্থায় তাকে গোসাবা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসকরার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ।

কুলতলির পর আবার বাঘ ঢুকে পড়ে সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের লাহিড়ীপুর অঞ্চলের চরঘেরী এলাকায় । মৎস্যজীবীরা নদীতে মাছ ধরার সময় দেখতে পায় ওই গ্রামের নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ।

আর এই পায়ের ছাপ দেখে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে । সঙ্গে সঙ্গে তারা গ্রামে ফিরে এসে গ্রামবাসীদের খবর দেয় । পাশাপাশি খবর দেওয়া হয় স্থানীয় বনবিভাগের অফিসেও । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে সজনেখালি রেঞ্জের বনকর্মীরা এবং বিশাল পুলিশ বাহিনী ।

বাঘটিকে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়া ও যাতে লোকালয়ে না ঢুকে পড়ে তার জন্য বনকমীরা চারিদিকে জাল দিয়ে ঘিরে দেয়। সেই জাল ঘেরার সময় ঘটে বিপত্তি । দক্ষিণ রায়ের থাবায় জখম হয় ওই বনকর্মী ।

এদিকে ঘটনাস্থলে আসে বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসুর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। তবে রবিবার সকাল পর্যন্ত বাঘটিকে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি । তাই আর কোনোরকম ঝুঁকি নিতে চাইছেননা  বনকর্তারা ।

জঙ্গলের “মহারাজ”কে তাই খাঁচা বন্দি করতে ইতিমধ্যেই ছাগলের টোপ দিয়ে একটি খাঁচা পাতা হয়েছে । আরো একটি খাঁচা পাতার তোড়জোর শুরু হয়েছে ও জাল দিয়ে চারিদিকে ঘিরে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বনকর্তারা ।

প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে মরিচঝাঁপি জঙ্গল থেকেই বাঘটি বেরিয়ে এসে গাড়াল নদী সাঁতারে চরঘেরী এলাকায় ঢুকে পড়ে । পাশাপাশি শনিবার রাতে গোসাবার কুমিরমারির বাগনা বনবিভাগের অফিসের পাশে একটি কলাবাগানে গ্রামবাসীরা দেখতে পায় আরো একটি বাঘকে । তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকা জুড়ে ।

বাঘ তাড়াতে কোমর বেঁধে আসরে নামে বনকর্মীরা । শীতের রাতে দীর্ঘ কসরত করেও দক্ষিণ রায়কে এলাকা ছাড়া করতে অসহায় অবস্থায় পড়তে হয় তাদের । শেষমেষ পরপর দুটি ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয়ে যায় সুন্দরবনের “মহারাজা”। এরপর তাকে খাঁচা বন্দি করে নৌকায় চাপিয়ে ঝড়খালি নিয়ে আসা হয় । রবিবার শারীরিক পরীক্ষার পর তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে তার ডেরায় ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *