নিজস্ব সংবাদদাতা :: পাথরপ্রতিমা :: সংবাদ প্রবাহ :: একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে এখনো কুসংস্কারে আচ্ছন্ন রয়েছে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্ত। এখনো গ্রাম বাংলার মানুষের আস্থা রয়েছে ওঝা ও গুনিনের উপর। ওঝার ওপর আস্থা রেখে আবারও তার মাশুল দিত হলো সুন্দরবনের বর পরিবারের সদস্যদের।সাপের কামড়ের রোগীকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে না নিয়ে গিয়ে পরিবারের লোকজন গুণিনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে চলল ঝাড়ফুঁক ও মন্ত্র উচ্চারণ। দেহে আর প্রাণসঞ্চার হলো না । মৃত্যু হল শুভ বরের (৮) ।ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পাথরপ্রতিমার অচিন্ত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর এলাকায়। স্থানীয় সূত্র জানা যায়, শংকর বর ও মালতী বরের এক মাত্র ছেলে শুভ বর। সংসারে হাল ফেরাতে দম্পতি দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে। শুভ ঠাকুরদা ও ঠাকুরমার কাছে থাকতো। শুক্রবার ভোরে ঘুমাবার সময় সাপে কামড় দেয় ওই শিশুর। যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে শিশুটি। পাশেই ছিলো ঠাকুমা এবং দিদি। নাতির কান্নায় ঘুম ভেঙে যায় তার,হঠাৎ দেখতে পায় বিছানার মধ্যে বিশাল বড় বিষধর সাপ এবং একটি ব্যাঙ।ঠাকুমা বুঝতে পারে নাতিকে কামড়েছে সাপ। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে এলাকার নিরঞ্জন বর নামে ওঝার কাছে নিয়ে যায়। সারা রাত্রি ধরে চলে ঝাড়ফুঁক মন্ত্র উচ্চারণ। অবস্থার অবনতি হওয়ায় অনেক বেলায় গদামথুরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয় । ততক্ষণের সব শেষ চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।বর্তমানে শিশুটিকে ময়নাতদন্তের জন্য কাকদ্বীপ পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে বিজ্ঞানের যুগে কুসংস্কারের আচ্ছন্ন এখনো বহু মানুষ তারই প্রমাণ মিলল পাথরপ্রতিমায়।
এলাকায় শোকের ছায়া। ওঝাকে আটকে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ।পাথরপ্রতিমা থানার পুলিশের হাতে আটক ওঝা। বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বরুন বর জানান, বারে বারে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করলেও এখনো মানুষ কুসংস্কারের অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়েছে। মানুষকে কুসংস্কারের অন্ধকার থেকে মুক্ত করতে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।