দেবী জগদ্ধাত্রীর সঙ্গে ব্যসদেব ও নারদ মুনির পুজো হল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে।

উদয় ঘোষ :: সংবাদ প্রবাহ :: বর্ধমান :: পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুয়ায়ী দেবী জগদ্ধাত্রীর সেবক হিসাবেই মানা হয় ব্যাসদেব ও নারদ মুনিকে। সেই বিষয়টিকে মান্যতা দিয়ে শনিবার দেবী জগদ্ধাত্রীর সঙ্গে একই সঙ্গে ব্যসদেব ও নারদ মুণির পুজে হল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে।এক আধ বছর ধরে চটোপাধ্যায় বাড়িতে এইভাবে জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে এমনটা নয়।

দেড়শো বছরেরও বেশী সময়কাল ধরে পারিবারিক রীতি ও ষোড়শ উপাচার মেনে এই ভাবেই জগদ্ধাত্রী পুজো হয়ে আসছে চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে ।পারিবারিক পুজো হলেও শক্তির এই দেবীর আরাধনা ঘিরে এখন মাতোয়ারা এলাকার বাসিন্দারা ।

জামালপুরের কালীতলা পাড়ায় বসবাস বনেদি চট্টোপাধ্যায় পরিবারের।এই পরিবারের কেউ ডাক্তার ,কেউ উকিল আবার কেউ সরকারী উচ্চ পদে চাকুরি করেন।কর্মসূত্রে বছরের বেশীরভাগ সময়টা পরিবার সদস্যরদের কলতাকায় থাকতে হয় । তবে জগদ্ধাত্রী পুজোয় সময় পরিবারের সকল সদস্য নিজেদের পৈতৃক বাড়িত চলে আসেন ।

সাবেকি বাড়ির এক পাশে রয়েছে দেবী জগদ্ধাত্রীর মন্দির ।মন্দিরের চারপাশ জুড়ে যেখানেই চোখ যাবে দেখা যায় শিল্প নৈপুণ্যতার ছোঁয়া। পুজোতেও থাকেনা শ্রদ্ধা ও ভক্তিবাবের কোন খামতি । পরিবারের কর্তা দিলীপ চট্টোপাধ্যায় তাঁর ছেলে সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায় ও বংশের সবাইকে নিয়ে বংশের আরাধ্য দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো অর্চনা সারেন । পরিবারের কন্যা রুনা চট্টোপাধ্যায় জানালেন ,দেড়শো বছরেরও বেশী সময়কাল ধরে তাঁদের বাড়ির মন্দিরে দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো হয়ে আসছে ।

একই সঙ্গে তিনি বলেন, তাঁদের বাড়ির দেবী প্রতিমাতেও রয়েছে বিশেষত্ব । এক চালার কাঠানোর ত্রনয়নী দেবী প্রতিমার এক পাশে থাকেন মহাভারতের রচয়িতা ব্যাসদেব । আর অপর পাশে থাকেন নারদ মুনি । দেবী জগদ্ধাত্রীর দুই পাশে তাঁদের স্থান দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে রুনা চট্টোপাধ্যায় বলেন , পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী ব্যাসদেব ও নারদ মুনি দেবির সেবেক হিসাবেই পরিচিত । জগদ্ধাত্রির পুজোর মন্ত্রেও নারদমুনি ও ব্যাসদেবের কথা উল্লেখ রয়েছে ।সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায় বলেন,তাদের পরিবারে জগদ্ধাত্রী

পুজো শুরুর লিখিত ইতিহাস সেভাবে কেউ লিখে যান নি । তবে পূর্ব পুরুষরা যেমন রীতি ও উপাচার মেনে পুজোর সূচনা করেছিলেন তা মেনে আজও তাঁরাও পুজো করে আসছেন । পূর্বে নবমীর দিন ছাগ বলিদান হলেও এখন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । পরিবর্তে ছাঁচি কুমড়া বলি দেওয়া হয়। এদিন মন্দির প্রাঙ্গনে ভোগ অন্ন গ্রহন করেন ভক্তরা । এলাকার প্রর্তিটি মানুষ চটোপাধ্যায় পরিবারের দেবী জগদ্ধাত্রী দেবির পুজোতে মাতোয়ারা হন। সৌমাল্য চটোপাধ্যায় এও জানান ,দশমীর পুজো শেষে দামোদর নদে হয় তাঁদের বাড়ির আরধ্যদেবী জগদ্ধাত্রী প্রতিমার বিসর্জন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *